আওয়ামীলীগ ও সেনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইউএনডিপি’র করোনাকালীন চাল বিতরণ বন্ধ করার অভিযোগ

0
768

হিলভয়েস, ২৫ আগস্ট ২০২০, রাঙ্গামাটি: সম্প্রতি রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি ও খাগড়াছড়ি জেলায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও সেনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইউএনডিপি’র করোনাকালীন দরিদ্র জনগণের মাঝে চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, আওয়ামীলীগ ও সেনা কর্তৃপক্ষ চাল বিতরণের উপকারভোগীদের মধ্যে ৬০% শতাংশ আদিবাসী জুম্ম বলে অভিযোগ তুলে এবং এটাকে সাম্প্রদায়িকতার লেবেল দিয়ে ইউএনডিপি’র চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগস্ট ২০২০ শুক্রবার ধীমান ত্রিপুরার নেতৃত্বে ইউএনডিপি’র একদল প্রতিনিধি দরিদ্র জনগণের মাঝে চাল বিতরণের জন্য বাঘাইছড়ি উপজেলায় যান। সেখানে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট জনগণের মাঝে চাল বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু বাঘাইছড়ির ১২ বীরবাঘাইহাট সেনা জোনের কম্যান্ডার হুমায়ুন কবির, বাঘাইহাট ৫৪ বিজিবি জোনের কম্যান্ডার লে: কর্ণেল আল হাকিম মো: নওশাদ এবং মারিশ্যা ২৭ জোনের কম্যান্ডার লে: কর্ণেল মো: আনোয়ার ভূঁইয়া সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ তুলে ইউএনডিপি’র উক্ত চাল বিতরণ কর্মসূচি বন্ধ করে দেয়।

জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতারা ৪০% ভাগ চাল বাঙালিদের দেয়া হলেও ৬০% ভাগ চাল পাহাড়ি এলাকায় দেয়া হয় বলে অভিযোগ তুলে স্থানীয় সেনা ও বিজিবি কর্তৃপক্ষের নিকট ইউএনডিপি’র চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানান।

অভিযোগ রয়েছে, এর কিছুদিন আগেও খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগের ভিত্তিতে আওয়ামীলীগের খাগড়াছড়ি আসনের এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা খাগড়াছড়িতে ইউএনডিপি’র চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেন।

জানা গেছে, ইউএনডিপি কর্তৃপক্ষ গ্রামের হেডম্যান, কার্বারিদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ কওে এবং তাদের সাথে কথা বলে উক্ত চালবিতরণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এদিকে স্থানীয় জনগণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামীলীগ এবং সেনা ও বিজিবি কর্তৃক ইউএনডিপির চালবিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ায় তারা গভীরভাবে হতাশ ও মর্মাহত হয়েছেন।

স্থানীয় জনগণের ধারণা, চরম সাম্প্রদায়িক ও কায়েমি স্বার্থবাদী একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িকতা ও হিংসার বশবর্তী হয়ে ইউএনডিপি কর্তৃক পাহাড়ি এলাকায় চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী জুম্ম জনগণ বরাবরই সরকারী-বেসরকারী সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাস করার কারণে তাদের জীবন-জীবিকা তুলনামূলকভাবে কঠিন। বিশেষকরে কোভিড-১৯ মহামারীর লকডাউনে তাদের জীবনযাত্রা আরও দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।