রাঙ্গামাটিতে আদিবাসী দিবস উপলক্ষে মহিলা সমিতি ও এইচডব্লিউএফের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

0
878

হিল ভয়েস, ৩ জুলাই ২০২২, রাঙ্গামাটি: আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আজ ৩ আগস্ট ২০২২ সকাল ১০ ঘটিকায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি রীতা চাকমার সভাপতিত্বে ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শান্তি দেবী তঞ্চঙ্গ্যার সঞ্চালনায় ‘ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষণ ও বিকাশে আদিবাসী নারী সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও সাহিত্যিক শিশির চাকমা।

শিশির চাকমা

‘সমাজে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠাকল্পে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে অধিকতর সামিল হউন’- এ আহ্বানের মধ্য দিয়ে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ম্রানুচিং মারমা ও বিবৃতি পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ শাখার সদস্য হিরা চাকমা। বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা, বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি ভবতোষ দেওয়ান, উইমেন্স রির্সোস নেটওয়ার্কের সদস্য নুকু চাকমা, যুব সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাগর ত্রিপুরা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জগদীশ চাকমা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক শিশির চাকমা বলেন, আমরা জানি আদিবাসী সমাজ বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের কথা বলি, আমাদের জীবন-জীবিকা হচ্ছে জুমনির্ভর। জুমনির্ভর পাহাড়ের সন্তানগুলো আছে। এই পাহাড় ও বনকে ঘিরেই আমাদের জীবন-জীবিকা। এই জীবন-জীবিকা আমরা বিভিন্নভাবে উদযাপন করে থাকি। এবং সেই আবহমানকাল থেকে আমাদের এখানে পুরুষ এবং নারী বিশেষ করে জুমিয়া বৈষম্য ও নিপীড়নের চিত্র আমরা তেমন দেখতে পাই না। জুম্ম সমাজের মধ্যে নারীরাই সবচেয়ে বেশি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। তারাই আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। একটা জাতির অহংকার, একটা জাতির গর্বের বিষয় তার সংস্কৃতি, তার পোশাক। এ দিকটি নারীরা গর্বের সাথে টিকিয়ে রেখেছে, অথচ পুরুষরা সেটা করতে পারিনি। তাই তাদেরকে আমাদের শ্রদ্ধা করতে হয়, সম্মান করতে হয়।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু নয়, সমতলে যে আদিবাসীরা রয়েছেন তাদের মধ্যেও যে আদিবাসী ধ্যান-জ্ঞান, ঐতিহ্যগতভাবে আদিবাসীদের জ্ঞানগুলো আমরা ধারণ করি, যে মূল্যবোধগুলো ধারণকরি সে মূল্যবোধগুলো অত্যন্ত সমৃদ্ধ, শক্তিশালী। এখান থেকে আমরা বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা পাই। কিন্তু আজকে এই জ্ঞানগুলো কর্পোরেট সংস্থা দ্বারা ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে। আমরা যে রাষ্ট্রের অধীনে থাকি, এ রাষ্ট্রই আমাদের পাশে দাঁড়ায় না। আজকে আমরা দেশের নেতৃবৃন্দদের কাছে বলতে শুনি আদিবাসীদের আমরা রক্ষা করছি। তাদের সংস্কৃতি আমরা রক্ষা করছি। তাদের উন্নয়ন করছি। প্রতিনিয়ত একথাগুলো বলা হচ্ছে। কিন্তু সে উন্নয়নের ফল আমরা কি পাচ্ছি? আজকে প্রথমেই আমাদের আত্মপরিচয়ের সংকটের কথা বলি। আমাদের প্রথমে বলা হয় উপজাতি, এরপর বলা হয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। কত অভিধায় যে আমাদের বিশেষণে বিশেষিত করছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। কদিন আগে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছে আদিবাসী শব্দটি যাতে ব্যবহার না করে। কি লজ্জাকর ব্যাপার। এবার যে জনশুমারি হলো এ জনশুমারিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সমতলের আদিবাসীদের যে জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে, যে জনসংখ্যার চিত্র আমরা দেখলাম, এটাও প্রশ্ন বিদ্ধ। জনশুমারিতে আদিবাসীদের সংখ্যাটা কম করে দেখানো হয়েছে। এর আগে যে জনশুমারি হয়েছে সেখানেও কম করে দেখানো হয়েছে। আজকে তিন পার্বত্য জেলার জনসংখ্যা প্রায় সমান-সমান। আমরা ক্রমান্বয়ে সংখ্যালঘুতে পরিণত হচ্ছি। আমাদেরকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হচ্ছে। এটা কিন্তু ষড়যন্ত্রের অংশ।

তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দু’দশক হয়েছে, বাস্তবায়ন হচ্ছে না। সরকার প্রচার করছে উন্নয়ন হচ্ছে। যে উন্নয়নগুলো হচ্ছে পার্বত্য চুক্তিতে স্পষ্টই আছে আঞ্চলিক পরিষদকে অবহিত না করে, সম্মতি না নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন হতে পারে না। সে আঞ্চলিক পরিষদকে আজকে অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। কোনো প্রবিধান হয় নাই। অনেকেই মনে করে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি জনসংহতি সমিতি করেছে। না, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি জনসংহতি সমিতি করে নাই। এটা জনগণের দলিল। জনগণের সমর্থনে জনসংহতি সমিতি। পার্বত্য চট্টগ্রামে জনসংহতি সমিতির যে আন্দোলন তাকে অস্বীকার করা যাবে না। সরকার জনসংহতি সমিতির সাথে চুক্তি করেছে ঠিক, কিন্তু এই চুক্তি কি বাস্তবায়ন না করে পারবে?

তিনি বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে বহুত্ববাদের দেশ। এটা তারা বলে থাকে। একটা কথা তারা খুব বড় করে, চিৎকার করে বলে, প্রচার করে ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। রাষ্ট্র তো সবার না। এই সংবিধান বঙ্গবন্ধুর সংবিধান নয়, এটা প্রথম পাঁচাত্তর আগ পর্যন্ত সংবিধান, এই রাষ্ট্রের সংবিধান নয়। এই সংবিধান আজকে সমস্ত বাংলাদেশে যারা বসবাস করছে তাদের জন্য এ সংবিধান নয়। সংবিধান বহুবার কাটা ছেঁড়া করা হয়েছে। কিন্তু আদিবাসীদের সুরক্ষার জন্য একটি লাইন লেখার তাদের স্বদিচ্ছা নাই। এবার দেখুন, আমাদের কী করতে হবে। আমরা সংখ্যায় কম হতে পারি, ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী হতে পারি, কিন্তু অধিকারের প্রশ্নে, জীবন-জীবিকার প্রশ্নে, বেঁচে থাকার প্রশ্নে তারা সংগ্রাম করছে, করবে। এমন একটা সময় আসবে এই পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হবে। সরকার কোনো অবস্থাতে এড়িয়ে যেতে পারবে না। নানা বিভাজন করে, বিভিন্ন সশস্ত্র দল গঠন করা হচ্ছে এগুলোতো দৃশ্যমান। যারা এসব গঠন করে দিচ্ছে কয়েকদিন পর দৃশ্যমান হচ্ছে। এসব নীলনক্সাগুলো কেন করা হচ্ছে? এগুলোতে বেড়িয়ে আসছে, এগুলো কী করে ঢেকে রাখবেন? সুতরাং বিভাজন করে, কর্তৃত্ববাদ দিয়ে, নিষ্পেষণ করে, অত্যাচার করে, আদিবাসীদের, জুম্ম মানুষের অধিকারকে খর্ব করতে পারবেন না।

তিনি আরো বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে অতিসম্প্রতি তাদের রাষ্ট্রের সর্ব্বোচ পদে এক সাঁওতালকে তারা নির্বাচিত করেছে। আমাদের এই দেশ, তারা দেখে না? আমাদের আইনপ্রণেতারা আছে, তারা দেখে না যে, ক্ষুদ্র জাতিগুলোকে যদি সম্মান দিই, আত্মপরিচয়ের অধিকার দিই, তাদের সম্মান কী কমবে না বাড়বে? সারাবির্শ্বই তো জানে ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশে ৫০ লক্ষ আদিবাসীও নাই। তাদের যে আচরণ এটা তো অনাচারের সামিল। রাষ্ট্র অন্যায় করছে। আমরা প্রতিবাদ করছি। হয়তো তাদের সাথে পেরে উঠছি না। তাই বলে কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? আমরা কি নি:শেষ হয়ে যাবো? রাষ্ট্র কি সেটাই চায়? আজকে আমরা আদিবাসীদের নিপীড়ন, নির্যাতন ও দমিয়ে রাখার প্রবণতা আমরা দেখি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য সাধুরাম ত্রিপুরা বলেন, রাষ্ট্র পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন নীতি অনুসরণ করছে সেটা আমাদের সবার কাছে স্পষ্ট। বাংলাদেশে কোন স্থানে, কি অবস্থায় আদিবাসীরা বসবাস করছে সেটা আন্তর্জাতিক মহল জানে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নে সবাইকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ও সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি ভবতোষ দেওয়ান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন না হলে কোনো অধিকারই অর্জন হবে না।

উইমেন্স রির্সোস নেটওয়ার্কের সদস্য নুকু চাকমা বলেন, খাদ্য সংরক্ষণসহ ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি বিকাশে আদিবাসী নারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাগর ত্রিপুরা বলেন, সন্ত্রাসী তকমা দিয়ে জুম্মদের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন চলছে। জেল-জুলুমের ভয় দেখিয়ে জুম্মদের দমিয়ে রাখা যাবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য চুক্তি বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নাই। উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের আগ্রাসনে আদিবাসীদের জীবন-জীবিকা আজ নিষ্পেষিত। পার্বত্য চট্টগ্রামে যে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিণতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে।

পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জগদীশ চাকমা বলেন, যারা আদিবাসী বিরোধী পরিপত্র জারি করেছে, তারাই সংবিধান পরিপন্থী কাজ করেছে। সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। এটা সংবিধানের বাক্ স্বাধীনতা ও অধিকারের হরণ।

বিবৃতি প্রকাশ

আলোচন সভা আয়োজন ছাড়াও মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দিবসটি উপলক্ষে একটি বিব্রতিও প্রকাশ করা হয়।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ বহু জাতির, বহু ভাষার, বহু সংস্কৃতির বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। এ দেশে বৃহত্তর বাঙালি জনগোষ্ঠী ছাড়াও ৩০ লক্ষাধিক আদিবাসী মানুষ স্মরণাতীত কাল থেকে বসবাস কওে আসছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে তাদের জীবন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আশা-আকাঙ্খা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আদিবাসী জনগণের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, আজ উগ্র জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার আগ্রাসনে তাদের সংস্কৃতি ও জীবনধারা বিপন্ন হতে চলেছে।’

বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম নারী সমাজ জুম্ম জনগণের ঐতিহ্যগত বিদ্যা সংরক্ষণ ও বিকাশের লক্ষ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পুর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করার জন্য আন্দোলন কওে যাচ্ছে। বলাবাহুল্য পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়িত না হওয়ায় জুম্ম নারীরা নানা ধরনের যৌননিপীড়ন ও সহিংসতার শিকার হচ্ছে। গভীর উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এসব ঘটনার কোনো একটির যথাযথ বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করা হয়নি।’

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের বাস্তবতা খুবই নাজুক। পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের ২৫ বছর হতে চললেও সরকার চুক্তির মৌলিক ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ অবাস্তবায়িত অবস্থায় রেখে দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী আওয়ামীলীগ সরকার বর্তমানে এক নাগাড়ে ১৪ বছর ধওে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেও চুক্তির অবাস্তবায়িত বিষয়সমূহ বাস্তবায়নে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ ও উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। … সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে পূর্ববর্তী স্বৈরাচারী সরকারগুলোর মতো সাম্প্রদায়িক, অগণতান্ত্রিক ও জুম্ম জনগণের অস্তিত্ব বিলুপ্তির ভ্রান্তনীতি গ্রহণ করেছে। জনসংহতি সমিতির সদস্য ও সমর্থকসহ পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে সোচ্চার ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী’, ‘চাঁদাবাজ’, ‘অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত’ হিসেবে পরিচিহ্নিত করার জন্য ব্যাপক অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। জুম্ম জনগণের ঘরবাড়ি তল্লাসী, গ্রেফতার, বিচার-বহির্ভুত হত্যা, ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের, নারীর প্রতি সহিংসতা, অনুপ্রবেশ, ভূমি বেদখল, চুক্তি বিরোধী অপপ্রচার ইত্যাদি মানবতা ও জুম্ম স্বার্থ বিরোধী কার্যক্রম জোরদার করেছে। ফলত: পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণ নিরাপত্তাহীন ও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে জীবনধারণ করতে বাধ্য হচ্ছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের এহেন অনিশ্চিত ও নাজুক পরিস্থিতিতে জুম্ম নারীর সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। সমস্ত নির্যাতিত, নিপীড়িত ও অধিকারহারা মানুষের মুক্তি সংগ্রামের সঙ্গে নারী মুক্তি সংগ্রাম অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পৃক্ত। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামে জুম্ম জাতির উপর জাতিগত নিপীড়ন ও সহিংসতা, তা থেকে জুম্ম নারীর মুক্তি ও নিরাপত্তা, সর্বোপরি সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।’