আগামী সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো: উ উইন মং জলি

হিল ভয়েস, ২ ডিসেম্বর ২০২৫, বান্দরবান: আজ ২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে বান্দরবান জেলা সদরের রাজার মাঠ প্রাঙ্গণে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।

উক্ত সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জেএসএস নেতা থুই মং প্রু মারমা, হিল উইমেন ফেডারেশনের জেলা সভানেত্রী উলিসিং মারমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সিং ওয়াই মং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম হেডম্যান নেটওয়ার্কের আইন বিষয়ক সম্পাদক মংনু মারমা হেডম্যান প্রমুখ। এছাড়াও বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন বলেও জানা গেছে।

সমাবেশে উ উইন মং জলি বলেন, ‘দীর্ঘ দুই যুগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সমাপ্তি ঘটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের জন্য বিএনপি সরকারের আমলে ১৬ বার এবং আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ৭ বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এসব আলাপ-আলোচনার ধারাবাহিকতায় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামীলীগ সরকারের পক্ষে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এবং জুম্ম জনগণের পক্ষে জেএসএস সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্রীয় বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। তবে এই চুক্তি স্বাক্ষরের ২৮ বছর পার হলেও এটি আজও সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি আজ প্রতারণার দলিলে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, চুক্তির মূল ধারাগুলো বাস্তবায়িত না হওয়ায় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আস্থা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ভূমি কমিশনের কার্যক্রম শুরু করতে গেলেই তথাকথিত বাঙালি সংগঠনগুলো হরতাল ডাকে এবং মিটিং বানচাল করে দেয়। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘যারা সংবিধানে সম্পৃক্ত হতে চায় তারা কি বিচ্ছিন্নতাবাদী? নাকি যারা সংবিধানে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতে চায় না তারাই বিচ্ছিন্নতাবাদী?’

উ উইন মং জলি আরও জানান, ‘অস্ত্র জমা দেওয়া হলেও প্রশিক্ষণ জমা দেওয়া হয়নি, কারণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথ রুদ্ধ হলে অনিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্ম হয়।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী সরকার চুক্তি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবে। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলেও জানান জেএসএস সহ-সাধারণ সম্পাদক।

মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মেঞোচিং মারমা বলেন, আমাদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে বুঝাতে হবে আন্দোলনের সপক্ষে।কার্বারী-হেডম্যানদের তাদের পুরনো ধ্যান থেকে বেরিয়ে নিয়ে এসে জুম্মদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সামিল করতে হবে। আমাদের বসে থাকার আর সুযোগ নেই।

সভাপতির বক্তব্যে সুমন মারমা বলেন, বিগত কোন সরকারের আমলে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। যারা বিএনপি-আওয়ামী লীগ করে জুম্মদের মধ্যে তারা কেউই অধিকারের সপক্ষে আন্তরিকতা দেখাননি বরং সরকারের উগ্রবাঙালী ও ইসলামী সম্প্রসারণবাদের দোসর হয়ে পার্বত্য চুক্তি বিরোধীতার ভূমিকার অবতীর্ন হয়েছিলেন।

More From Author