ইসলামি ছাত্র শিবির কর্তৃক কিছু জাতি গোষ্ঠীকে হেয় প্রতিপন্ন করায় জবাবদিহি চেয়ে চাকসুর নিকট আবেদন দ্রোহ পর্ষদের

হিল ভয়েস, ১১ অক্টোবর ২০২৫, চট্টগ্রাম: সম্প্রতি চাকসু নিবার্চনকে কেন্দ্র করে ইসলামি ছাত্র শিবির মনোনিত প্যানেলের সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট-এর সহ-সাহিত্য সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী জিহাদ আহনাফ তার নির্বাচনী প্রচারণার নামে কিছু নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর পোশাক ও সংস্কৃতিকে হেয় প্রতিপন্ন এবং বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়।

এই ঘটনায় ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী, দ্রোহ পর্ষদ এবং ইফাজ উদ্দিন আহমদ ইমু সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী, দ্রোহ পর্ষদের স্বাক্ষরিত নির্বাচন কমিশন (চাকসু) বরাবর এক আবেদন করা হয়। এতে এহেন হীন কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দ এবং উক্ত প্রার্থীর ও তার সমর্থিত প্যানেলকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি দ্রোহ পর্ষদের পক্ষ থেকে জোর দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য গত ১০ অক্টোবর ২০২৫ জিহাদ আহনাফ নিজের ব্যক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে নির্বাচনী প্রচারণার নামে কিছু নির্দিষ্ট জাতিগোষ্ঠীর পোশাক ও সংস্কৃতিকে হেয় প্রতিপন্ন এবং বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে পোস্ট করেন। এতে মূহুর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ শুরু হয়।

এই সময় এক ফেইসবুক ব্যবহারকারী এর প্রতিবাদ হিসেবে লিখেন, সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গের সমতা ও সমান মর্যাদা একটি গণতান্ত্রিক দেশের সৌন্দর্য। কোনো জাতির সংস্কৃতিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন সেই জাতিকে অপমান করার সামিল। আমি ভাইদের চিনি না, তবে তারা চাকসুর প্রার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের দেশের বৈচিত্র্যময়তাকে সম্মান করা এবং সঠিকভাবে রিপ্রেজেন্ট করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব। বাংলাদেশে বৃহত্তর বাঙালি জাতিগোষ্ঠী ব্যতীত অন্য জাতিসমূহকে জাতীয়ভাবে অস্বীকৃতি ও বিচ্ছিন্নকরণের রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের ফসল হলো আমাদের সমতলের বাঙালি ভাই-বোন,বন্ধু,সহপাঠীরা আমাদের নিয়ে তেমন জানে না, যা জানে সেসবের অধিকাংশই মিথ। এই চিন্তাগত সংকীর্ণতার জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে সকল জাতির স্ব স্ব সংস্কৃতি ও অধিকার নিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক এই প্রত্যাশা। ভাইদের উচিত এই ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং আদিবাসী সংস্কৃতিকে তুলে ধরার আগে সঠিকভাবে অধ্যয়ন করে স্পষ্ট হওয়া।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেন, একটি জাতির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি তা হলো সংস্কৃতি । এটি দীর্ঘকাল ধরে সমাজে চর্চার ফলাফল হিসেবে গড়ে ওঠে। কোনো একটি নির্দিষ্ট সমাজের জীবনধারার প্রতিফলনই হলো সংস্কৃতি, যা সময়ের ব্যবধানে গড়ে ওঠে। একটি জাতির সংস্কৃতি রাতারাতি গড়ে ওঠে না-বরং এটি দীর্ঘ সময় ধরে চর্চা ও অভ্যাসের মধ্য দিয়ে রূপ নেয়। আধুনিক সভ্যতার শুরু থেকে সমাজে জাতির মেরুদণ্ড হিসেবে সংস্কৃতি বিবেচিত হয়ে এসেছে। সেজন্য একটি জাতিকে বিকৃত ভাবে উপস্থাপন করা মানেই সেই জাতিকে অবমাননা করা। চাকসু প্রার্থী বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়েও একটি জাতির সংস্কৃতিকে নিয়ে ব্যঙ্গ করা তাদের মতেও উচিত হয়নি।

More From Author

+ There are no comments

Add yours