হিল ভয়েস, ৬ অক্টোবর ২০২৫, আন্তর্জাতিক: গত ৫ অক্টোবর, ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে আইফেল টাওয়ার সংলগ্ন মানবাধিকার চত্বরে সাম্প্রতিক সময়ে খাগড়াছড়ি জেলায় জুম্ম আদিবাসী জনগণের ওপর সহিংসতা, দমন-পীড়ন এবং গুইমারা ও মহাজনপাড়া এলাকায় সেটেলার বাঙালিদের হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে ৩ জনকে হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশ পরিচালনা করেন স্মরণিকা চাকমা ও বাপ্পি চাকমা । সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন পার্থ দেওয়ান, জেনারেল সেক্রেটারি, La Voix Des Jummas।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- রেমি ফ্লেগিয়ের চাকমা, প্রেসিডেন্ট, La Voix Des Jummas, সুনীতি চাকমা, প্রেসিডেন্ট AJHA, সাইলা প্রু মারমা, রাজু চাকমা, কে চৌধুরী, রিগ্যান দেওয়ান, সিদ্ধান্ত তঞ্চঙ্গ্যা, সেক্রেটারি, European Jumma Indigenous Council, সমাপ্তি বগ্নি চাকমা, উপদেষ্টা LVJ, উলাচিং মারমা, মেকসুয়েল চাকমা, সহ-সভাপতি, LVJ, অংচিং মারমা ও সুধানা দেওয়ান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সিঙ্গিনালায় ১২ বছর বয়সী এক মারমা কিশোরীকে সেটেলারদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে “জুম্ম ছাত্র জনতা” প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে উগ্র সেটেলারদের হামলায় তিনজন গুরুতর আহতসহ বহু জুম্ম জনগণ আহত হন। সেই রাতেই য়ংড বৌদ্ধ বিহারে হামলার চেষ্টা চালানো হয়, যার ফলে বিহারের প্রাচীর ও গেইটসহ স্থাপত্য কাঠামোর ক্ষয়ক্ষতি হয়।
পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, খাগড়াছড়ির জেলার গুইমারা উপজেলায় চলমান শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরস্ত্র জুম্ম জনগণের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ চালায়। একই সঙ্গে রামসু বাজার এলাকায় সেটেলারদের সমন্বিত হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেটেলারদের হাতে অন্তত ৩ জন জুম্ম আদিবাসী নিহত, ৪০ জন আহত, ৫ জন নিখোঁজ এবং ১৫টি বাড়ি, ৬০টি দোকান ও ৭টি বসতবাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
বক্তারা বলেন, এই ঘটনাগুলো জাতিসংঘের “Convention on the Prevention and Punishment of the Crime of Genocide (1948)”-এর সংজ্ঞা অনুযায়ী স্পষ্টভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের অন্তর্ভুক্ত।
মানবাধিকার সংগঠন La Voix Des Jummas প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও অবহেলাজনিত ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে এবং নিম্নলিখিত দাবি জানায় –
১. আহত, নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি অবিলম্বে মানবিক সহায়তা ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ প্রদান।
২. ধর্ষক, হামলাকারী ও উগ্র সেটেলারদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
৩. ঘটনার ওপর নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তদন্ত পরিচালনা।
৪. ভবিষ্যতে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন রোধে কার্যকর ও স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ।