হিল ভয়েস, ১৬ আগস্ট ২০২৫, বিশেষ প্রতিবেদক: গতকাল (১৫ আগস্ট) সকালের দিকে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সদরের শান্তিনগর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গুলিতে ‘মগ পার্টি’ খ্যাত মারমা লিবারেশন পার্টির নেতা হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত ব্যক্তির নাম কংচাইঞো মারমা (৩১), পীং-অংগ্যজাই মারমা, গ্রাম-গরিয়াছড়ি, সিন্ধুকছড়ি ইউনিয়ন, গুইমারা উপজেলা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। কংচাইঞো মারমা মগ পার্টির একজন নেতৃস্থানীয় সদস্য এবং মগ পার্টির উত্তরাঞ্চল তথা খাগড়াছড়ি এলাকার সামরিক শাখার প্রধান বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে ওয়াকিবহাল এমন প্রায় সকল ব্যক্তিই জানেন যে, মগ পার্টি হচ্ছে বিগত আওয়ামীলীগ দলের স্থানীয় নেতা ও সেনাবাহিনীর সৃষ্ট এবং মদদপুষ্ট পার্বত্য চুক্তি বিরোধী, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী সংগঠন। দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীরই আশ্রয়েপ্রশ্রয়ে এই মগ পার্টির সদস্যরা একাধিক দলে বিভক্ত হয়ে প্রধানত রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী, বাঙ্গালহালিয়া, কাপ্তাই ও বান্দরবানের কিছু কিছু এলাকায় ঘাটি গেঁড়ে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সম্প্রতি সেনাবাহিনীরই সহযোগিতায় খাগড়াছড়ির কিছু কিছু এলাকায় মগ পার্টির কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে বলে জানা যায়।
কিন্তু গতকাল সেনাবাহিনীরই গুলিতে কংচাইঞো মারমার নিহত হওয়ার ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে নানা তথ্য পাওয়া গেছে।
একটি সূত্রে জানা যায়, গতকাল খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনী ও মগ পার্টির সন্ত্রাসীদের মধ্যে একটি গোপন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী যাকে টার্গেট করবে তার সাথে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর এই নির্দেশে রাজী না হওয়ায় পরে সেনাবাহিনী কংচাইঞো মারমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে।
অপর একটি সূত্র জানায়, গতকাল সকালে হঠাৎ খাগড়াছড়ি সদরের শান্তিনগর এলাকায় গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। পরে গোলাগুলিতে কংচাইঞো মারমা নামে মগ পার্টির এক নেতা নিহত বলে জানা যায়।
অপরদিকে, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, খাগড়াছড়ির শান্তিনগরে একটি ভবনটি ঘেরাও করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালালে সেনাবাহিনী ও কংচাইঞো মারমার মধ্যে গুলি বিনিময় হয়। এসময় কংচাইঞো মারমা তিনতলা ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আহত অবস্থায় কংচাই মারমাকে আটক করে। এরপর কংচাইঞো মারমাকে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. টিপা ত্রিপুরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে, অনেকেই সেনাবাহিনীর এই ব্যাখ্যাকে নাটক বলে অভিহিত করছেন।
+ There are no comments
Add yours