হিল ভয়েস, ৪ আগস্ট ২০২৫, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোকে অশান্ত করে তোলার চক্রান্তে বাংলাদেশের পার্বত্য চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে। এই অভিযোগ উঠে এসেছে খোদ ত্রিপুরা রাজ্যের চাকমা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে, যা ত্রিপুরার সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
গতকাল (৩ আগস্ট) ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতী জেলার নতুন বাজার থানা এলাকার ভানু কার্বারি পাড়ায় চাকমা সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ এক সামাজিক সভায় এই অভিযোগের কথা তুলে ধরা হয়। সভায় চাকমা সমাজের বিশিষ্ট সামাজিক নেতা দেবজান চাকমা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।
সভায় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করে বলেন, বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেকগুলো সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে। তার মধ্যে ইউপিডিএফ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের গোয়েন্দা শাখার ক্লোজ সংগঠন। ইউপিডিএফের ষড়যন্ত্রে বিগত ৩০ জুলাই, অমরপুর মহকুমার নতুন বাজারে যে মিছিলটি হয়, তাতে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে দাবি করা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সন্তু লারমার দলের নেতা-কর্মী, সমর্থকদেরকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে হবে।
১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর জনসংহতি সমিতি এবং বাংলাদেশ সরকারের সাথে যখন চুক্তি হয়, তখন ডিজিএফআইয়ের ঘনিষ্ট ইউপিডিএফ চুক্তির বিরোধীতা করে এবং তখন থেকেই ডিজিএফআই ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অস্থিরতা সৃষ্টি করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। ইউনুস সরকারের জমানায় এক্ষেত্রটি অতি স্পর্শকাতর হয়ে সামনে আসে। ডিজিএফআইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট ইউপিডিএফ কর্মীরা যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। তারই বহিঃপ্রকাশ হলো গত ৩০ জুলাই গোমতী জেলার নতুন বাজারে মিছিলের মাধ্যমে।
গোমতী জেলার নতুন বাজার থানা এলাকার ভানু কার্বারি পাড়ায় অনুষ্ঠিত চাকমা সম্প্রদায়ের উক্ত সভায় উপরোক্ত ষড়যন্ত্রের তীব্র বিরোধীতা করা হয়। এছাড়া সভায় পাকিস্তানি সংস্থা আইএসআই এবং বাংলাদেশের সংস্থা ডিজিএফআই যৌথভাবে ভারতের ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোকে অশান্ত করে তোলার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করা হয়। গত ৩০ জুলাই এধরনের উদ্দেশ্যেই আচমকা নতুন বাজার থানা এলাকায় মিছিল আয়োজন করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
উক্ত সভায় চাকমা সমাজের নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শুধু চাকমাদের টার্গেট করা হচ্ছে, অথচ অন্যান্য জনজাতি ও বাংলাভাষীরাও আসছে ওপার থেকে। এই পরিস্থিতিতে চাকমা নেতৃবৃন্দ ভারত বিরোধী যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে এবং এমনকি আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনের জন্যও তারা প্রস্তুত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাই ২০২৫ ইউপিডিএফের ষড়যন্ত্রে ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতী জেলার অমরপুর মহকুমার নতুন বাজারে পরানধন চাকমা ও কার্তিক চাকমার নেতৃত্বে ৪০/৪৫ জন চাকমা কর্তৃক জেএসএসের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো অভিযোগ এনে এক বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করা হয় এবং অমরপুর মহকুমা শাসক-এর বরাবরে এক স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায় যে, গত ৩০শে জুলাই নতুনবাজারে আয়োজিত মিছিলটি আয়োজনের জন্য ইউপিডিএফ (প্রসিত) পরানধন চাকমা ও কার্তিক চাকমাকে ২৫ লক্ষ রুপী প্রদান করে। এই মিছিলে অংশগ্রহণের জন্য অংশগ্রহণকারীদেরকে জনপ্রতি ১,৫০০ রুপী করে দেয়া হয়। এভাবে সুবিধাবাদীদের দিয়ে ইউপিডিএফ (প্রসিত) জেএসএসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অজুহাত এনে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে।