হিল ভয়েস, ২৫ জুন ২০২৫, বান্দরবান: গত ২১ জুন ২০২৫ তারিখে বান্দরবানে আলীকদম উপজেলায় ৩ নং নয়াপাড়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কইঁয়া ঝিড়ির মেনথক ম্রো পাড়া ও কাইংওয়াই ম্রো পাড়ায় ম্রো জনগোষ্ঠীর রোপনকৃত কলাবাগান ও পেঁপে বাগান লামা বন বিভাগ কর্তৃক কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, লামা বন বিভাগের অধীন আলীকদম রেঞ্জের কর্মকর্তা ও বন প্রহরীদের একটি দল কোনো প্রকার নোটিশ কিংবা আলোচনা ছাড়াই মেনথক ম্রো ও কাইংওয়াই ম্রো পাড়ার বাসিন্দা য়াংয়ুং ম্রো, রেংথাং ম্রো, ডিংওয়াই ম্রোয়ের আনুমানিক ছয় একর জায়গা জুড়ে প্রায় ১২০০ টি কলাগাছ ও ৪ টি উচ্চফলনশীল পেঁপে গাছ কেটে ফেলে দেয় এবং কলাবাগান কেটে কড়ই, গামারি ও কৃষ্ণ চূড়ার গাছ রোপণ করে বনবিভাগের সদস্যরা চলে যায়।
ক্ষতিগ্রস্ত ডিংওয়াই ম্রো বলেন, দুই বছর আগে আমরা চার পরিবার মিলে এখানে প্রায় ১৪৫০ মতো কলাগাছ রোপণ করেছি। আমাদেরকে কোনো প্রকার নির্দেশনা ছাড়াই কলাবাগান কেটে ফেলা হয়েছে। কলাবাগানে কলা ধরেছে এমন কলা গাছগুলোও কেটে নিয়ে গেছে বনবিভাগের সদস্যরা।
অন্যদিকে, য়াংয়ুং ম্রো জানান, দুই মাস আগে রোপণ করা নতুন জুমের ধান গজাতে শুরু করেছিল। বন বিভাগের লোকজন ওই জমিতেও চারা রোপণ করতে গিয়ে ধানের চারাগুলো নষ্ট করে ফেলেছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে জানান, গাছ কাটার কারণ জানতে চাইলে বন বিভাগের এক কর্মকর্তা হুমকি দিয়ে বলেন- এই বিষয়ে সাংবাদিক বা অন্য কারও কাছে অভিযোগ করলে রিজার্ভ বন ধ্বংস ও গাছ পাচারের মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। ভয়ে তারা প্রথমে মুখ না খুললেও, পরে স্থানীয়ভাবে আলোচনার পর পাড়াবাসীরা গণমাধ্যমে বিষয়টি জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
অন্যদিকে ভিউ পয়েন্ট এলাকায়, ৮ ও ১০ নাম্বার ব্রিজের পাশে এবং ইয়াংরিং ম্রো পাড়ার পাশ্ববর্তী এলাকার মধ্যে মাতামুহুরি রিজার্ভে বহিরাগত সেটেলার বাঙালির লোকজন বাগান করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বন বিভাগ।
উক্ত বন কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকার যেখানে বন করতে মন চায় সেখানে বন অনায়াসে করতে পারে এবং সেটি স্বাভাবিক। অপরদিকে ম্রো গ্রামবাসীরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এখানে আমরা চৌদ্দ পুরুষ ধরে বসবাস ও জুমচাষ করে আসছি। এখানকার কোনো জায়গা সরকার কর্তৃক বন করতে চাইলে আগে এখানকার গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলতে হবে তাদের পরামর্শ মোতাবেক তবেই সিদ্ধান্তে যেতে হবে। কিন্তু বন বিভাগ এই বিষয়ে কোনো প্রকার আলোচনা না করে এই জঘন্য কাজটি করেছে।