হিল ভয়েস, ২৩ জুন ২০২৫, বান্দরবান: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বান্দরবান জেলাধীন বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়ন থেকে আটককৃত নিরীহ ৯ জুম্ম গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে অবশেষে সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২০ জুন, আলীকদম সেনা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মোঃ মঞ্জুর মোর্শেদ, পিএসসি এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল বান্দরবান সদরের টংকাবতী ইউনিয়নের কয়েকটি জুম্ম গ্রামে অভিযান চালিয়ে ৯ নিরীহ চাকমা ও ত্রিপুরা গ্রামবাসীকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র অবস্থায় আটক করে। কিন্তু পরে সেনাবাহিনী ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দেশীয় অস্ত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম সহ ক্যামেরায় ছবি তোলে এবং নিরীহ ৯ গ্রামবাসীকে ডাকাত এবং তাদের সাথে অস্ত্র পাওয়া গেছে বলে মিথ্যা প্রচার করে।
এমনকি পরে, সেনাবাহিনী বান্দরবান সদর থানার এসআই (নিরস্ত্র) পংকজ কুমার সাহাকে দিয়ে বান্দরবান থানায় উক্ত ৯ জনের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এই মামলার এজাহারে “আলীকদম জোন ৩১ বীর সেনা ক্যাম্পের সদস্যগণ বান্দরবান সদর থানাধীন টংকাবতী ইউনিয়নের লতাঝিরি পাড়া গ্রামস্থ ধৃত আসামী আনন্দ মোহন চাকমা এর দোকান ঘরে ০৯ (নয়) জন ডাকাতকে অস্ত্র সস্ত্রসহ আটক করিয়া রাখিয়াছে” বলে মিথ্যা বিবরণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এজাহারে উক্ত ৯ গ্রামবাসীর কাছ থেকে দেশীয় বন্দুক, এয়ার গান, ছোরা ইত্যাদি পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত এজাহারের ভিত্তিতে বান্দরবান সদর থানায় মামলা হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হয় বলে জানা যায়। বান্দরবান সদর থানার মামলা নং- ১২ তারিখ: ২০/৬/২০২৫, ধারা ১৯ এ দি আর্মস অ্যাক্ট ১৮৭৮।
ভুক্তভোগী ৯ গ্রামবাসী হলেন- চাকমা পুনর্বাসন পাড়া গ্রামের বাসিন্দা (১) কল্প রঞ্জন চাকমা (৪৫), পিতা-ধন চন্দ্র চাকমা; (২) জ্যোতি বিকাশ চাকমা (৩৮), পিতা-ধন চন্দ্র চাকমা; (৩) শান্তি চাকমা (৩৭), পিতা-সুন্দর মনি চাকমা; (৪) তরুণীসেন চাকমা ওরফে সাথোয়াই (৫০), পিতা-কেগেরা চাকমা ও (৫) আনন্দ মোহন চাকমা (৭২), পিতা-তুক্ষে চাকমা, তিনিই গ্রামের বর্তমান কার্বারি এবং ইমানুয়েল ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা (৬) জুয়েল ত্রিপুরা (২৯), পীং-সতিজন ত্রিপুরা; (৭) সতিজন ত্রিপুরা (৬০), পীং-মৃত তাজচন্দ্র ত্রিপুরা; (৮) পাখিরাম ত্রিপুরা (৩০), পীং-মৃত পাইল অং ত্রিপুরা ও লতাঝিরি ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা (৯) শান্তি ত্রিপুরা (৩৮), পীং-জুতি ত্রিপুরা।
উল্লেখ্য যে, ঐ দিন (২০ জুন) সেনাবাহিনী কর্তৃক টংকাবতী ইউনিয়নের চাকমা পুনর্বাসন পাড়া, ইমানুয়েল ত্রিপুরা পাড়া ও লতাঝিরি ত্রিপুরা পাড়ার উক্ত ৯ গ্রামবাসীকে আটক করা ছাড়াও, সেনা সদস্যদের কর্তৃক মুক্তাজন ত্রিপুরা পাড়ার ২ জুম্ম নারী যৌন নিপীড়ন এবং ৩ জন নারী নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
+ There are no comments
Add yours