লামায় রণক্ষেত্র, হিন্দু মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর

0
591
ছবি: মন্দির এলাকায় ভাঙচুরের দৃশ্য

হিল ভয়েস, ১৪ অক্টোবর ২০২১, বান্দরবান: কুমিল্লায় “পবিত্র কোরান অবমাননার” অভিযোগ এনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে বান্দরবানের লামা। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে লামা বাজারে লামার সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে মুসল্লিরা প্রতিবাদ সমাবেশ করে। আর এই সমাবেশের পর লামা উপজেলার কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়। এসময় পুলিশ সদস্যসহ আহত হয় অর্ধশত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকালে লামা বাজারে কোরান অবমাননার অভিযোগে আহুত প্রতিবাদ সভায় শতাধিক মুসল্লি জামায়েত হয়। সভায় অন্যান্যের মধ্যে লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: শাহীন ও ওলামালীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

লামায় সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদি জনতা’র ব্যানারে মুসল্লিদের প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন লামা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, পৌর মেয়র মো: জহিরুল ইসলাম।

উক্ত প্রতিবাদ সভা শেষে প্রায় শতাধিক মুসল্লি জড়ো হয়ে লামা বাজারের কেন্দ্রীয় দূর্গাপূজা উৎসবের প্রধান গেইট ভাংচুর করে এবং বাজার এলাকায় অবস্থিত লামা উপজেলার কেন্দ্রীয় হরি মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাংচুর চালানো হয়।

এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রতিরোধ গড়ে তুলে ও এক পর্যায়ে ফাকা গুলি চালায়। এসময় মুসল্লিরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হয় লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এসময় ত্রিমুখী সংঘর্ষে মুসুল্লিসহ অনেকে আহত হলে,আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

পরে বাজারে অবস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত ৪০টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ৮টি বসত ঘরে ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করা হয়।

লামা থানার এসআই জুম্মা মোল্লা বলেন, যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরিস্থিতি শান্ত রাখতে লামা বাজারে ৩০ জন পুলিশ, একপ্লাটুন বিজিবি ও দুই প্লাটুন সেনা সদস্য নিয়োজিত রাখা হয়েছে।

আরো জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে উপজেলাটিতে। পারত পক্ষে কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি আতংক বিরাজ করছে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তারা জেলার সিনিয়র নেতাদের ফোন করে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন।

এই প্রথম সাম্প্রদায়িক এই সংঘাতের ফলে এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলায় পূজা মন্ডপে।

এই ব্যাপারে লামা হরি মন্দির কমিটির সভাপতি প্রশান্ত ভট্টাচার্য বলেন, “যে হিসাবে আমাদের উপর হামলা ও ভাংচুর করা হয়েছে প্রতিবাদ করে লাভ নেই, আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার চাইবো।”